
দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে যে শিরোপার পানে চেয়েছিল আর্জেন্টিনা, তার পূর্ণতা পেয়েছে লিওনেল মেসির হাত ধরে। তবে স্বপ্নের বিশ্বকাপ জিতেও মেসি-মার্টিনেজরা দেশে নিয়ে যাচ্ছেন ‘নকল’ ট্রফি। দেখতে আসল ট্রফির মতো লাগলেও সেটি আসলে ব্রোঞ্জের তৈরি একটি রিপ্লেকা।
আর্জেন্টিনাকে ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। রোববার (১৮ ডিসেম্বর) শিরোপা পুনরুদ্ধার করলেন লিওনেল মেসি। লুসাইল স্টেডিয়ামে পেনাল্টি শুটআউটে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে লাতিন আমেরিকার জায়ান্টরা। নির্ধারিত আর অতিরিক্ত সময়ের খেলা ৩-৩ ব্যবধানে সমতায় ছিল। পরে পেনাল্টি শুটআউটে জয় তুলে নেয় আলবিসেলেস্তেরা।
বিশ্বকাপে নিজের শেষ ম্যাচে যত অপ্রাপ্তি ছিল সবই মিটিয়েছেন মেসি। সৃষ্টিকর্তা তাকে দিয়েছেন দুহাত ভরে। বিশ্বকাপ জয়ের মাধ্যমে মেসির সব অপূর্ণতা পূর্ণতা পেল! কিন্তু আসল ট্রফি দেশে নিয়ে যেতে পারছেন না মেসিরা। অবশ্য আসল ট্রফিটি দেশে নিতে পারেননি ‘ফুটবল ঈশ্বরও’। কারণ বিশ্বকাপের ট্রফি চ্যাম্পিয়নরা ঘরে নিতে পারে না।
অবশ্য তিনবার বিশ্বকাপ জিতলে জয়ী দলকে আসল ট্রফিটি দেয়ার নিয়ম ছিল। সেই মতো ১৯৭০ সালে তৃতীয়বার বিশ্বকাপ জিতে আসল জুলে রিমে ট্রফি দেশে নিয়ে গিয়েছিলেন পেলেরা। কিন্তু ব্রাজিল ফুটবল সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে রাখা ট্রফিটি ১৯৮৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর চুরি হয়ে যায়। সেই ট্রফি আর ফেরত পাওয়া যায়নি। মনে করা হয়, ট্রফির সোনা গলিয়ে বিক্রি করে দেয়া হয়েছিল। শুধু নিচের অংশটি পাওয়া গিয়েছিল, যেটি রাখা আছে সুইজারল্যান্ডের ফুটবল মিউজিয়ামে।

সেই ঘটনার পর থেকে কোনো জয়ী দেশকে আসল ট্রফি দেয়া হয় না। দেয়া হয় বিশ্বকাপ ট্রফির প্রতিমূর্তি। তবে সেই ঘটনাই প্রথম নয়। তার আগে ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডে হারিয়ে গিয়েছিল আসল ট্রফি। একটি অনুষ্ঠান থেকে চুরি হয়ে যাওয়া ট্রফিটি ৭ দিন পরে পাওয়া যায়। পিকেলস নামে একটি কুকুর খুঁজে বের করেছিল ট্রফিটি।
তাই বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থার (ফিফা) নিয়ম অনুযায়ী, ট্রফিটি ফাইনাল ম্যাচ পর্যন্ত সুপ্রিম কমিটি ফর ডেলিভারি অ্যান্ড লিগ্যাসি এবং ফিফার তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। পরে একই ধরনের একটি ট্রফি (ব্রোঞ্জের প্রতিমূর্তি) জয়ী দলকে দেয়া হয়। আসল ট্রফি চলে যায় ফিফার কাছে। সুইজারল্যান্ডের জুরিখে ফিফা বিশ্ব ফুটবল মিউজিয়ামে রাখা হয় সেই ট্রফি।

Leave a Review